আশেপাশে এতো এতো ভুল তথ্যের ভীড়ে এবং মার্কেটিং এর কারনে আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার চিনতে ভুল করি ।আর তাই স্বাস্থ্যকর খাবার কোনগুলো- চিনতে হলে এবং খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি তিনটি পয়েন্ট বলছি, যেগুলো মাথায় রেখে বাজার করলে এবং সেই অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে, আপনি সহজেই সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করতে পারবেন:
১) স্থানীয় খাবার
২) সহজলভ্য এবং সহজেই আশেপাশের বাজারে পাওয়া যায়
৩) দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে
১) স্থানীয় খাবার/Local Food: যেসব খাবার বাংলাদেশের স্থানীয় খাবার এবং আমাদের দেশের কৃষকেরা অনেক বছর ধরে চাষ করে আসছেন ,সেগুলোই স্বাস্থ্যকর খাবার । অন্য দেশের খাবার যতই স্বাস্থ্যকর হোক না কেনো ,নিজের দেশের স্থানীয় খাবারের পুস্টিগুন এর সাথে বাইরের দেশের খাবারের পার্থ্যক্য আছে ।অবশ্যই বাইরের দেশের খাবারের পুস্টিগুন আছে ।কিন্তু আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার কোনগুলো? বাংলাদেশে আমাদের পরিবেশ , জীন সিকুয়েন্স ,জীবনযাত্রা ভৌগোলিক অবস্থান- এসব কিছু বিবেচনা করে এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে ,যা আমাদের দেশেই চাষ করা হয় ।
কারন ইদানিং স্যোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে,বাইরের দেশের খাবার আমাদের দেশে জনপ্রিয় হচ্ছে ,যার দাম ও অনেক বেশি। তাই চাইলেই সবাই কিনতে পারবে না ।অথচ সেই সব খাবারের পরিপূরক খাবার কিন্তু আমাদের দেশেই স্বল্প দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয় ।ওটস এর বদলে চিড়া খান ,ছিয়া সিড এর বদলে তোখমা খান ,অ্যাপল সিডার ভিনেগারের বদলে লেবু খান, ব্রাইন রাইস এর বদলে আমাদের গ্রামে বা স্থানীয় বাজারে এক ধরনের বাদামী রংয়ের ভাঙ্গা চাল পাওয়া সেটা খান ।এভোকেডো এর বদলে চিনা বাদাম খান।ড্রাই ফ্রূটস এর পরিবর্তে তরতাজা ফল খান ।প্রোটিন পাউডার না কিনে ডাল খান,কাচা ছোলা খান। ক্যালরি এর চেয়ে বেশি গুরুত্ত্ব দিন পুস্টিগুনের উপর।
আমরা জন্মের পর থেকে যেসব খাবার খেয়ে বড় হয়েছি এবং আমাদের শারীরিক গঠন এবং কাঠামো তৈরী হয়েছে,সেসব স্থানীয় বাংলাদেশী খাবার বাদ দিয়ে, হঠাত করে বাইরের দেশের খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত না ।মাঝেমাঝে খেতে পারেন কিন্তু এই খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরা অনুচিত।কারন বাঙ্গালদেশের সব মানুষ এই খাবারগুলো কিনতে পারবেনা ।Health equity and equality তৈরী করতে হলে ,সবার খাদ্যাভাষ একই রকম হতে হবে ।আমি এই আর্টিক্যাল্টি জারমানীতে বসে লিখছি । এখানের সুপারশপ গুলোতে আমিও যেরকম খাবার কিনতে যাই ,তেমনি একজন সুইপার ও সেখানেই খাবার কিনতে যান ,তেমনি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও সেখানেই খাবার কিনতে যান ।কিন্তু বাংলাদেশে বাসার পাশের মুদি দোকান এর খাবার এবং স্বপ্ন বা আগোরার খাবার এবং দাম সমান না ।
২) সহজলভ্য এবং সহজেই আশেপাশের বাজারে পাওয়া যায় : স্বাস্থ্যকর খাবার সেগুলোই যেগুলো আপনার বাসার পাশের মুদি দোকান বা বাজারে পাওয়া যায় ।যে খাবার খোজার জন্য আপনাকে বড় কোনো সুপারশপে যেতে হয়না ।আপনি ওটস আপনার বাসার পাশের দোকানে নাও পেতে পারেন কিন্তু চিড়া ঠিক ই পাবেন ।
৩) দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে : যেসব খাবারের দাম কম বা তুলনামূলকভাবে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ,সেটাই আপনার জন্য স্বাস্থকর ।ছিয়া সিডের দাম তিনশ টাকার নিচে হবে বলে মনে হচ্ছে না কিন্তু ২৫০ গ্রাম তোখমা আপনি ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকায় পাবেন।তিনশ/চারশপাচশ টাকার নিচে ওটস কিনতে পারবেন না কিন্তু ৩০ টাকায় আধা কেজি চিড়া কিনতে পারবেন ।
আমি আবারও বলছি ,বাইরের দেশের এই খাবারগুলো অসাস্থকর না কিন্তু সুসাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই স্বানীয় খাবার নির্বাচন করতে হবে ,যা খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং সবাই কিনতে পারে। যদিও আমি বলছি স্থানীয় খাবার আমাদের সাধ্যের মধ্যে ,কিন্তু তবুও এখনো অনেক মানুষ আছে যারা এক কেজি ডাল কিনতে গেলে চিন্তা করেন ।
আসুন ওজন এর উপর সব মনোযোগ না দিয়ে ,একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে যাই ।তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই আপনার অতিরিক্ত ওজন কমতে বাধ্য বা আপনি ওজন নিয়ন্ত্রন করতে স্কখম হবেন ।অতিরিক্ত ওজন কিন্তু অনেক রোগের কারন ।তাই রোগ্মুক্তির কথা চিন্তা করে ,আমাদের ওজন নিয়েন্ত্রন করা উচিত , স্থানীয় খাবারে অভ্যস্ত হওয়া উচিত ,নিয়মিত হাটা বা শরীরচর্চা করা উচিত এবং মানষিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখার জন্য নিজের শখের পরিচর্যা করা উচিত ,পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক রাখা উচিত, এবং সর্বপূরী নিজের সাথে একটি বন্ধুত্ত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত -আর এই সবগুলো কাজ একটু একটূ করে সময় নিয়ে অভ্যাসে পরিনত করে আমরা আমাদের জীবনের অনেক অপৃতীকর ঘটনাকে এড়িয়ে যেতে পারবো ।
https://ishraterina.com/%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a7%9f-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf/
Good article ?
Thank you so very much