যাদের গ্রামের বাড়িতে অনেক যাওয়া হয়, তারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন, বাড়ির উঠানে অনেকেই শুকনা খাবার রোদে শুকাতে দিয়ে থাকেন, যেসব খাবার একটু নস্ট হয়ে যায় অথবা fungus পরে যায়। এসব খাবার নস্ট হয়, কারন এতে ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়, ফাংগাস পরে সাদা হয়ে যায়। এমনকি শহরে অনেক বাসার ছাদেও এরকম খাবার শুকানোর চিত্র দেখা যায়। আমাদের শরীরেও এরকম। অনেক কারনেই আমাদের শরীরে TOXIN তৈরী হয়।আর আমাদের যত ধরনের রোগ হয়, সব কিছুর পেছনে রয়েছে এই টক্সিন। টক্সিন কিভাবে তৈরী হয় আমাদের শরীরে, এটা অনেক complex একটা scientific process, এই জটিল ব্যাখ্যায় গিয়ে কাউকে বিরক্ত করতে চাচ্ছিনা, তবে আমরা চাইলেই আমাদের জীবন যাত্রায় একটু পরিবর্তন আনলেই সব রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। আর শরীর থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে টক্সিন দূর করতে রোদের আলোয় মুক্তি পাওয়া সম্ভব।যৌন সংক্রামক রোগ
Toxin দূর করার সহজ উপায় হলো sunbathe বা সূর্যস্নানে যাওয়া। তার মানে হলো , রোদের মধ্যে সময় কাটানো- বসে, শুয়ে অথবা দাঁড়িয়ে থাকা এবং সমগ্র শরীরে রোদের আলো প্রবেশ করতে দেয়া। এ ক্ষেত্রে সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটার রোদ এ খুব ই ক্ষতিকর রশ্নি থাকতে পারে , যা স্কিন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়, ঠিক একই ভাবে এই সময় সান্সক্রিন মেখে রোদের মধ্যে ঘুরাঘুরি করলে, সান্সক্রিনে থাকা পদার্থ সূর্যরশ্নির সাথে chemical reaction করে স্কিন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। তাই নতুন কিছু গবেষনা বলছে, সানবাথ নেয়ার উপযুক্ত সময় সকাল ১০ টার আগে (৯টার আগে হলে আরো ভালো) এবং বিকেল চার টার পরে। কারন এই সময়ের সূর্যের আলো আরামদায়ক এবং ক্ষতিকর রশ্নি থাকার সম্ভাবনা খুবই কম ।।তাই নতুন গবেষনা বলে , সকালের রোদের আলো এবং বিকালের রোদের আলো সবচেয়ে উপকারী।
কিন্তু অনেক কারনেই আমাদের ১০ টা থেকে চারটার মধ্যেও বাইরে যেতে হয়, তাই সান্সক্রিন ব্যাবহার না করে ক্যাপ অথবা স্কার্ফ দিয়ে নিজেকে ঢেকে বের হওয়া যেতে পারে। রোদের মধ্যে যখন আপনি সানবাথ নিবেন, এসব টক্সিন তার ক্ষতিকারক ক্ষমতা হারায়, ঠিক যেমন রোদে fungus পরে যাওয়া খাবার শুকাতে দিলে আবার তা খাবার উপযোগী হয়ে যায়। আমাদের বডিতে অনেক জায়গায় এসব টক্সিন জমে থাকে, ঠিক যেমন ড্রেনের মধ্যে ময়লা জমে। আর এই সানবাথ এসব টক্সিন কে নিস্ক্রিয় করে এবং তা পরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে আসে, কখনো ঘামের মাধ্যমে, অথবা কখনো ইউরিনের মাধ্যমে। তাই এভাবে টক্সিন থেকে রোদের আলোয় মুক্তি পাওয়া খুব সহজ।
আধুনিক সভ্যতায় আমরা কেনো এতো বেশী অসুস্থ হই?
ফার্মাসিস্ট হওয়া সত্ত্বেও আমি বিশ্বাস করি যে “No Medicine is the best medicine “. আমরা অসুস্থ থাকি বলেই এতো বিজনেস টিকে আছে, কারন সুস্থ মানুষকে নিয়ে কোনো ব্যাবসা হয় না, হতে পারেনা।একটু খোজ নিয়ে দেখবেন কিভাবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এর নামে আমাদের মত অনুন্নত অথবা উন্নয়নশীন দেশের মানুষকে গিনিপিগ বানিয়ে কোটি কোটি টাকার ব্যাবসা হচ্ছে। সভ্যতার সূচনা লগ্নে, যখন মানুষ কাচা খাবার খেতো,যখন আগুন আবিস্কার হয়নি, যখন মানুষ কাপড় পড়তো না, তখনকার মানুষের ক্যান্সারের মত এতো মরনব্যাধী অসুখ হতো না। তখন চিকিৎসা ব্যাবস্থাও এতো উন্নত ছিলো না, কিন্তু মানুষ অনেক দিন বাচতো কারন তারা খাবারের সন্ধানে খুব সকালেই বেড়িয়ে পরতো, ফল-মূল সবজি কুড়িয়ে এনে কাচাই খেতো, দিনের আলোতেই তারা খাবার জোগাড় করে নিয়ে আসতো, বিকেলের আলো শেষ হবার আগেই খেয়ে ঘুমিয়ে পরতো, কারন ইলেক্ট্রিসিটি ছিলো না, তাহলে সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত তারা ঘুমিয়ে থাকতো, কোনো কিছু খেতো না, এটাকে বিজ্ঞ্বানের ভাষায় Intermittent/Dry fasting বলে। আমাদের সব ধর্মেও রোজা রাখার নিয়ম আছে, আমরা মুসলিমরা পানি না খেয়ে রোজা রাখি(dry fasting) and হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা পানি খেয়ে থাকেন (dry fasting) . Fasting দিয়ে ক্যান্সার এর মত মরনব্যাধী অসুখেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। দরকারে মেডিসিন খেতে হবে ,তবে মেডিসিন এর উপর খুব বেশি নীর্ভরশীল হয়ে যাওয়া খুব খারাপ।চাইলেই আমরা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বা প্রেস্ক্রিপশন ছাড়া মেডিসিন খেতে পারবো না, উচিত না আসলে। শুধুমাত্র OTC=Over the counter drugs আমরা ফার্মেসী থেকে প্রেস্ক্রিপসন ছাড়া কিনতে পারে, যদি স্থায়ী কোনো রোগ না থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে এই নিয়ম কেউ মানে না। এন্টিবায়োটিক এর মত ওষুধ ও ফার্মেসী তে প্রেস্ক্রিপশন ছাড়া বিক্রি করা হয়।
এখন চিকিৎসা ব্যাবস্থা অনেক উন্নত, আর এর সাথেসাথে আমরাও বেশি অসুস্থ হচ্ছি। সুস্থ থাকতে হলে আগের দিনের মানুষের জীবন যাত্রায় ফিরে যেতে হবে। কাচা খাবার খেতে বলছি না, তবে বেশি সেদ্ধ করা খাবার, ঝলসানো খাবার (গ্রিল), processed food( sausage) ক্যান্সারের কার্সিনোজেন তৈরী করে, ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।মাঝেমাঝে এসব খাবার খাওয়া যেতে পারে, তবে নিয়মিত খেলেই সমস্যা। যাই হোক।এই লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো সবাইকে সানব্যাথ(Sunbathe ) নেয়ার জন্য অনুপ্রানিত করা।মানে হলো টক্সিন সরাতে রোদের আলোতে যাওয়া ,রোদের আলোয় মুক্তি খোজা , যাতে করে আমাদের শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকারক টক্সিন নিস্ক্রিয় হয়ে যায় এবং কোনো রোগের সৃস্টি না করে।তবে নতুন গবেষনা বলছে, সকাল ১০ টার আগে এবং বিকেল ৪ টার পরের সূর্যের আলোতে যেতে হবে।
কখন সূর্যের আলোতে যাবেন ,সেটা নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক আছে। তাই যে সময়ের সূর্যের আলো আপনার জন্য আরামদায়ক ,সে সময়ের সূর্যের আলোতেই যাবেন।সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। রোগ হবার আগেই রোগমুক্তির উপায় খুজুন।
আমার কথা বিশ্বাস করতে হবে না ।এই নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো চেক করে নিতে পারেন বিস্তারিত তথ্যের জন্যঃ
সূর্যের আলোতে ভিডামিন ডি থাকে না তবে সূর্যের আলো যখন আমাদের শরীরে এসে পরে ,তখন শরীরে ভিটামিন ডি তৈরী হয়।কিন্তু সকাল ১০ টা থেকে বিকেল চারটার ইউভি রশ্নিতে ক্ষতিকর রশ্নি থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যসমস্যা তৈরী করতে পারে ।তাই ভিটামিন ডি এর জন্য পুরোপুরি সূর্যের আলোর উপর নীর্ভরশীল না হয়ে,ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারগুলো খেতে হবে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি এর পুস্টিচাহিদা পূরন করার জন্য।যদিও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা খুব কম ।তাই সতর্ক হতে হবে।
- https://www.who.int/news-room/q-a-detail/radiation-sun-protection
- https://www.who.int/news-room/q-a-detail/radiation-the-ultraviolet-(uv)-index
- https://www.epa.gov/sunsafety/health-effects-uv-radiation#skincancer
- https://www.epa.gov/sunsafety
সবাই ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।
কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রন করে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুনঃ
Recent Comments