সমাজ ,সংসার এমনকি কর্মক্ষত্রে এখন মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে নিজেদের যোগ্যতার প্রমান দিয়ে । কিন্তু এই যোগ্যতা কিছু কিছু সময় অযোগ্যতায় পরিনত হয় যখন একটা মেয়ে “ মা’’ হতে পারেনা ,আমরা যাকে বন্ধ্যা বলি । এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেনো মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে কথা তে বলছি ,এই সমস্যা তো একটা ছেলেরও থাকতে পারে ?হ্যা পারে ,তবে একটা বিবাহিত দম্পতি যখন সন্তান জন্ম দানে ব্যার্থ হোন ,তখন বেশিরভাগ  ক্ষেত্রেই প্রথমে একটা মেয়েকেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ,বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করানো হয় ,অনেক ঔষধ খেতে দেয়া হয় ,কিন্তু এই সমস্যাটা যে একজন পুরুষের ও হতে পারে ,এটা প্রথম অবস্থাতেই আমাদের সমাজে চিন্তা করা হয় না ।

এমন ও অনেক পরিবার আছে যেখানে মেয়েদের অনেক মানষিক অত্যাচার করা হয় ,তাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয় “ তুমি মা হতে পারবে না , এটা তোমার অযোগ্যতা ,অক্ষমতা ” । এমনকি যদি একজন পুরুষের শারীরিক সমস্যার কারনে সন্তান জন্মদানে বাধা সৃষ্টি হয় , বেশিরভাগ ক্ষেতেরি একজন নারীকেই সব প্রশ্ন এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হতে হয় ।

তবে এটা বলে রাখা ভালো যে এই বন্ধ্যাত্ত্ব কোনো অযোগ্যতা নয় ,বরং এটা একটা মেডিকেল কনডিশন ,যা কিনা  নারী-পুরুষ উভয়েরই শারীরিক সমস্যার কারনে   হতে পারে। চলুন জেনে নেই কিছু সাধারন সমস্যার কথা ,যার কারনে নারী  কিংবা পুরুষ সন্তান জন্মদানে অক্ষম হতে পারেন ।

 

পুরুষের সন্তান জন্মদানে বাধার কারন :

অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষনায় দেখা গেছে যে ,শতকরা ৯০ ভাগ পুরুষের ক্ষেতেই  কম স্পার্ম উৎপন্ন হওয়ার কারনে, স্পার্মের অস্বাভাবিক আকৃতি অথবা চলাচলের কারনে  এই সমস্যার সৃষ্টি  হতে পারে । আর সন্তান জন্মদানে এই স্পার্ম এর  ভূমিকা খুবই গুরুত্ত্বপূর্ন ,কেননা এই স্পার্ম ই একজন নারীর ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয়ে জাইগোট এবং ভ্রুনের সৃষ্টি করে ,যা থেকে একটা

সন্তান জন্ম গ্রহন করে । এছাড়াও অনেক হরমোন জনিত সমস্যা ,শরীরে বিভিন্ন যৌনাংগের প্রতিবন্ধকতার কারনেও একজন পুরুষ সন্তান জন্মদানে ব্যার্থ হতে পারেন ।

নারীদের সন্তান জন্মদানে বাধার কারন :  

বেশির ভাগ নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্ম দিতে না পারার কারন হলো অভ্যুলোশন -এটা ডিম্বানু উৎপ্নন হওয়ার প্রক্রিয়া ।অনেকের অভারিতে ডিম্বানু স্বাভাবিক নিয়মে তৈরী হয় না ,যার ফলে মাসিক অনিয়মিত হতে থাকে ,আবার মাসিক অনিয়মিত হলে জন্মবিরতিকরন পিল খেতে হয় ,যার ফলে ওজন অনেক বেড়ে যায় ,যা সন্তান জন্ম দানে বাধা সৃষ্টি করে । এছাড়াও হরমোন জনিত কারন তো আছেই । আবার কিছু কিছু ক্ষেতের নারীদের ফেলোপিয়ান টিঊব এর অক্ষম তার কারনে ডিম্বানু ইঊটেরাসে  প্রবেশ করে করে ভ্রুন তৈরী করতে পারেনা।

আবার নারীদের ক্ষেত্রে  বয়স ও অনেক গুরুত্ত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে । ত্রিশ বছরের পর সাধারন ভাবেই মহিলাদের ডিম্বানু উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া কম কার্যকরী ও ধীরগতি সম্পন্ন হতে থাকে এবং ৪৪ বছরের পর আর ও ধীরগতি সম্পন্ন হতে থাকে ।সুতরাং যেসব নারীরা ত্রিশ বছরের পরে সন্তান জন্মদানে ব্যার্থ হয়ে থাকেন ,বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই  কম  ডিম্বানু উৎপাদনের প্রক্রিয়া দায়ী ।

সর্বোপুরি ,নারী অথবা পুরুষ উভয়েরই শারীরিক সমস্যার কারনে সন্তান জন্মদানে বিপত্তি ঘটতে পারে ।অনেক বৈজ্জানিক গবেষনায় দেখা গেছে ,কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ দম্পতির কোনো শারীরীক সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও অনেক দম্পতি সন্তান জন্মদানে ব্যার্থ হয়ে থাকেন।তাই আসুন ,নিজে জানি ,অপরকে জানাই এবং  পরিশেষে এমন একটা সমাজ গড়ে তুলি যেখানে কোন নারী অথবা পুরুষকে সন্তান জন্ম দানে ব্যার্থতার কারনে মানষিক এবং সামাজিক প্রতিবন্ধকতার শিকার না হতে হয় ।