স্বাস্থ্য যখন অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত ,তখন আমাদের সব স্বাস্থ্যের প্রতিই যত্নবান এবং শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরী । প্রজনস্বাস্থ্য কে সুরক্ষিত রাখতে যেমনি প্রজনন অংগপ্রত্যং সম্পর্কে জানতে হবে ,যত্ন নিতে হবে, ঠিক তেমনি পরিপূর্ন এবং শ্রদ্ধাশীল শারীরিক সম্পর্ক প্রজনন স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। আর শারীরিক সম্পর্ক  আমাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের অধিকার। কিন্তু বিবাহিত অনেকেই আছেন ,যারা তাদের ব্যাক্তিগত জীবনে প্রজনন স্বাস্থ্যকে নিয়ন্ত্রন এবং পরিচর্যা করতে পারছেননা ।ডাক্তারদের কাছে আসা বিবাহিত মহিলাদের নিয়ে গবেষনার পর দেখা গেছে ,তাদের মানষিক এবং শারীরিক অসাঞ্জস্যতার পেছনে রয়েছে  তাদের হাসবেন্ডের সাথে অপরিমিত শারীরিক সম্পর্ক এবং অতৃপ্তি,পারস্পারিক শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাসের অভাব ।
অনেক মেয়েরা urinary tract infectionvaginal discharge and thrush, burning sensations in the vagina, pain and discomfort and lower abdominal pain এর কারনে ডাক্তারের কাছে এসে থাকেন। তাদেরকে খাদ্যব্যায়ামঘুম এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী জীবনধারা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেয়ার পর  এবং ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণগুলি নির্ধারণ করে মেডিসিন দেয়ার পর সব ঠিক ছিল,শুধুমাত্র তখন যৌন স্বাস্থ্যের অর্থবহতা বাকি থেকে যায়। যেহেতু আমাদের সামাজিক এবং ধর্মীয় কিছু নিয়ম–কানুন আছে ,তাই অবিবাহিতের জন্য শারীরিক সম্পর্ক সহজ নয়।অনেকের পছন্দের মানুষ থাকে আবার অনেকের থাকেনা। তাই সব যুক্তি তর্ক বাদ দিয়ে ,আধুনিক বিজ্ঞান এর গবেষনা অনুযায়ী মাস্টারবেসন কে নিরাপদ বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। তবে সেটা যেনো মাত্রাতিরিক্ত না হয়। আমরা সেক্স এর মত সাধারন একটা ব্যাপার নিয়ে লজ্জায় কথা বলি না ,ছোটদের এসব ব্যাপারে শিখিয়ে শ্রদ্ধাশীল করে তুলিনা ,বিবাহিত জীবনে শারীরিক সম্পর্কে অসুখী হলে সেটা নিয়ে হাসবেন্ড অথবা ডাক্তারের সাথে কথা বলিনা ।

কথা বললে বা সচেতননতা তৈরী করলেই যে তরুনরা সবাই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বে ,ব্যাপারটা এমন না । বিজ্ঞানম্মত উপায়ে জানতে এবং জানাতে দোষের কিছু নেই । আমরা মানি আর না মানি ,যতই আমাদের ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুশাষন থাকুক না কেনো ,এখনো আমাদের বাংলাদেশে একটি বড় অবিবাহিত তরুন দল আছে ,তারা সেক্সুয়ালী এক্টিভ। এই দলেড় প্রজনন স্বাস্থ্য কতটা ঝুকিপুর্ন অবস্থায় আছে ,সেটা অনিরাপদ গর্ভপাত এর হিসেব দেখলেই বুঝা যায়।   এবার আসি মাস্টারবেশন এর কথায়। কেউ যদি তার বিবাহিত জীবনও শারীরিকভাবে তার হাসবেন্ডের সাথে অসুখী থাকেন ,অথবা কেঊ যদি দেরীতে বিয়ে করেন, সেক্ষেত্রে পরিমিত পরিমানে এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাস্টারবেশন করা দোষের কিছু না । আধুনিক বিজ্ঞানের বেশির ভাগ গবেষনাই  মাস্টারবেশন(পরিমিত) কে শারীরিক এবং মানষিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে অনেকেই আছেন মাস্টারবেসনন এর প্রতি অনেক বেশি আকৃস্ট হয়ে পড়েন ,যা মাতৃত্ত্ব, প্রজনন এবং মানষিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আর বেশিরভাগ মেয়েরাই sex, fantasies, orgasms, intercourse and sexual dysfunctions নিয়ে খোলাবেলা আলোচনা করতে লজ্জা পান । যার কারনে কেউ কোনো সমস্যা অনুভব করলেও সেটাকে এড়িয়ে যান । তাই বিজ্ঞানের সব গবেষনার আলোকে  বলা যায় ,মাস্টারবেশন(পরিমিত) আমাদের শারীরিক এবং মানষিক স্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনতে সক্ষম। মাস্টারবেসনের উপকারিতা :

  • এটি যৌন উত্তেজনা দূর করে এবং নিজের সম্পর্কে ভাল অনুভব করার একটি দুর্দান্ত উপায়।
  • মাস্টারবেশনের ফলে একটি মেয়ের যখন  orgasm হয় ,সেটা তার মন এবং শরীরকে তৃপ্তি দেয় কেননা Orgasm ডোপামিন, অক্সিটোসিন এবং এন্ডরফিন নামক হরমোন কে  নিসৃঃত করে।
  • যারা শারীরিক চাহিদা পূরন না হবার কারনে বিষন্নতায় ভোগেন ,তাদের জন্য মাস্টারবেসন মেডিসিনের মত কাজ করে।
  • যাদের ঘুমের সমস্যা আছে ,তাদের জন্য সেক্স অনেকটা মেডিসিনের মত কাজ করে ।কিন্তু এই  সুযোগ না থাকলে মাস্টারবেসন করা সহজতর উপায়।এর ফলে আমাদের শরীর থেকে  অক্সিটোসিন  নামক হরমোন নিসৃঃত হয় যা  শরীর এবং মনকে শান্ত করে এবং পরিমিত ঘুমে সহায়তা করে।
  • মাস্টারবেসন এর ফলে উইটেরাইন কন্ট্রাকশন হয় । তাই যাদের মাসিক অনিয়মিত ,তাদের জন্য মাস্টারবেসন উপকারী কারন এই উইটেরাইন কন্ট্রাকশন মাসিকের রক্তকে প্রবাহিত এবং অতিবাহিত করতে সাহায্য করে ,মাসিকের সময় ক্রেম্প এবং ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।
  • মাস্টারবেসন   শরীর এবং মনকে ,শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াই যৌন অনুভূতি দিতে   সহায়তা করে  ,যা প্রজনন এবং মানষিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
  • মাস্টারবেসন ব্রেইন এ রক্তপ্রবাহে সাহায্য করে।
  • মাস্টারবেসন এর ফলে যে অরগাসম(orgasm) এবং কন্ট্রাকশন হয় ,তা মেয়েদের pelvic floor and muscles কে শক্তিশালী করে তো…
  • অরগাসম(orgasm) এর ফলে হার্ট রেট ভালো থাকে ,রক্ত প্রবাহ ঠিক মত হয় , ত্বক সুন্দর থাকে ।আর যেহেতু এটি অক্সিটোসিন নামক হরমোন নিসৃঃত করে ,সেহেতু মনকে শান্ত করে এবং অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে।

আর মনে রাখতে হবে বেশি বেশি কোনো কিছুই ভালো না। তাই মাসারবেসন যাতে অধিক পরিমানে না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সবকিছুর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।   মাসারবেসন অনেকেই অনেক ভাবে করে থাকেন ,কেঊ সেক্স টয় ব্যাভার  করেন, কেঊ অন্যভাবে করে থাকেন ,তবে যে যেভাবেই করেন না কেনো ,শুধু মনে রাখতে হবে ,এটা যেনো অতিরিক্ত না হয় এবং নিজের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। নিজেকে সেক্সুয়াল এক্টিভিটি থেকে  বঞ্চিত করলে  প্রজনন স্বাস্থ্য এবং মানষিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমাদের সেক্সুয়াল লাইফ যখন অসম্পূর্ন থাকে ,তখন আমাদের মানষিক স্বাস্থ্য ভালো থাকেনা ,যা কিনা আমাদের শারীরিক সাস্থ্যের জন্য্ব হুমকীসরুপ ।তাই শরীরে কোনো অনিয়ম  অথবা রোগ দেখা দিলেই মেডিসিন নেয়ার আগে বুঝতে হবে যে আমাদের প্রজনন স্বাস্থ্য ঠিক আছে কিনা। সেক্সুয়াল লাইফ ঠিক করার পরও যদি অসামঞ্জস্যতা থাকে ,তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।