স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জীবনচক্র শুরু হয় যখন পুরষের শুক্রাণু ডিম্বাশয় প্রবেশ করে এবং ডিম্বানুকে নিষিক্ত করে । যৌনমিলনের স্বাভাবিক এই প্রকিয়াকে অত্যন্ত সঠিকভাবে  ফার্টিলাইজেশন বলে। এমন প্রক্রিয়ায় পুরুষ এবং মহিলা হ্যাপ্লয়েড গ্যামেটস (শুক্রাণু এবং ডিম) একত্রিত হয়ে জাইগোট সৃষ্ঠি হয় এবং পরবর্তীতে এই জাইগোট থেকে ভ্রুন তৈরী হয়। আর ভ্রূন থেকেটি একটি পরিনত সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পারে।

ডিম্বানু(ovum or egg) একটি  একক কোষ যা অভারি নামক  প্রজনন অঙ্গ থেকে উদ্ভূত হয়,  শুক্রাণুর মাধ্যমে নিষিক্ত হয়ে  নতুন জীবের বিকাশে অথবা সন্তান জন্মদানে সক্ষম। মানব দেহের সবচেয়ে বড় কোষ হল ডিম্বাণু যা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই খালি চোখে দেখা সম্ভব। মানুষের ডিম্বাণু সাধারনত ০.১২ মিলিমিটার আকারের হয়ে থাকে। মানুষসহ অন্যান্য  প্রানীতে ডিম্বানুর নিষিক্তকরন প্রাণীদেহের অভ্যন্তরে ঘটে থাকে। মানব ডিম্বানু শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার পর জরায়ুতে স্থাপিত হয়।

 

মানব শুক্রাণু হ্যপ্লয়েড কোষ অর্থাৎ এতে ক্রোমোসোমের সংখ্যা এর উৎপাদক কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যার অর্ধেক। মানব শুক্রাণুতে ২৩টি ক্রোমোসোম থাকে যা ডিম্বাণুর ২৩টি ক্রোমোসোমের সাথে যুক্ত হয়ে ২x২৩ ক্রোমোসোম বিশিষ্ট ডিপ্লয়েড জাইগোট সৃষ্টি করে। আর এই জাইগোট থেকেই ভ্রুন এবং পরবর্তীতে নতুন সন্তান জন্মগ্রহন করে ।

সব ডিম্বানুই যে সক্রিয় তা কিন্তু নয়। নিষ্ক্রিয় শুক্রানুর মত নিষ্ক্রিয় ডিম্বানুও আছে ।তাই যৌন মিলনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার শুধুমাত্র  শুক্রানু এবং ডিম্বানুর মিলিত হলেই জাইগোট গঠন করবে না । শুধুমাত্র সক্রিয় শুক্রানু এর সাথে সক্রিয় ডিম্বানু মিলিত হলেই জাইগোট থেকে ভ্রুন এবং ভ্রুন থেকে সন্তান জন্ম দেয়া সম্ভব।

ডিম্বানুতে বিদ্যমান ক্রোমোসোমগুলো জীবের বৈশিষ্ট্যের বাহক জিন বহন করে যা জীব থেকে তার বংশধরের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। আর এ কারনেই শুক্রানু প্রজননতন্ত্র এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ।বয়সন্ধিকাল থেকেই ডিম্বানু উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, এ সময় থেকেই একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিপূর্ন খাদ্য তালিকা তৈরী করে সে অনুযায়ী জীবন যাপন করতে হবে। খাদ্য তালিকার সাথে প্রজনন স্বাস্থ্যের উর্বরতাও (fertility) অনেকটা নির্ভর করে।